Thursday, January 11, 2007

তোমারই কবিতা

আকাশের পানে চেয়ে দেখ মুখটি তুলে
চাঁদখানি কেমন করে পড়েছে হেলে।
জোসনার আলোই তোমা উঠোন জুড়ে
তোমার সাথে বসে আছি নিশিকাল ধরে।
সারাক্ষণ আমি থাকি তোমার আসে পাশে
দিবা নিশি সকাল সন্ধা তোমারই নিঃশ্বাসে।
মনটা খারাপ করে তখন থাক তুমি একা
নিশিথিনীর সাথে যখন হয়নাকো দেখা।
চোখের পানি মুছে ফেলে ভেবো একটু ক্ষণ
তোমার মাথায় হাতটা বুলাই যখন তখন।


(২৮ ফাল্গুন ১৪১২/হাউজিং, কুষ্টিয়া)

তোমার আমি

আমিতো আমার নয় হয়েছি তোমার,
তুমি ছাড়া কেমনে বাঁচি বলো আর।
কাটেনা সময় আর তোমার বিহনে,
তুমি জড়িয়ে আছো আমার জীবন মরনে।
তুমি যদি থাক পাশে সারাটা ক্ষণ,
জড়াবো এ বুকে তোমায় করে আপন।
তোমায় ভেবেই সারাটা দিন যায় বেয়ে,
রাত কাটে তোমার ছবি এ বুকে লয়ে।
ঘুমায়েও তোমাকে দেখি আমার স্বপনে,
তুমি মিশে আছো মোর কবিতা রচনে।
তোমাকে ছাড়া একটি ক্ষণও পারিনা ভাবতে,
মিশে আছো তুমি আমার সারা ধমণীতে।
যেও নাকে আমায় ছেড়ে কভু একা করে
মরে যাবে, মরে যাবে (আমি) তোমায় ছেড়ে।



(২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৩/মিরপুর, ঢাকা )

স্মৃতি থেকে

যেদিন তুমি আমায় ভুলে হাত বাড়াবে অন্য পানে,
প'ড়বে কি তখন আমায় মনে?
ও হাতের ঐ উষ্ণ ছোয়ায়
শিউরে উঠবে কঠিন হৃদয়
উঠবে জেগে হারানো প্রণয়,
চমকে উঠবে চুম্বনে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে।
ভাববে বুঝি আমোরই অধর ছুয়ে আছে অধর কোণে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে।

বরণের ঐ লোকের ভিড়ে থাকবে সবার চোখের কোণে,
প'ড়বে কি তখন আমায় মনে?
নবাগতের ফুলের তোড়া
বেদনা হয়ে করবে তাড়া
লাগবে একা আমায় ছাড়া,
আপন জনের আয়োজনে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে।
আপন জনের রুদ্র কখন ভরাবে দু'চোখ অশ্রুবানে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে?

গভীর রাতে নিদ্রা টুটে দেখবে সখার বুকের কোণে,
প'ড়বে কি তখন আমায় মনে?
সখার বুকের উষ্ণতা তখন
আপন দেহ করবে দহন
ভাববে ক্ষণে আমিই আপন,
ভাঙ্গবে ভাবনা বন্ধনে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে।
স্মৃতির পাতার মোর ছবিটা ভাসবে তখন চোখের কোণে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে?

যখন সখার বুকে মিশে রইবে বাহু বন্ধনে,
প'ড়বে কি তখন আমায় মনে?
সকাল সন্ধা কিংবা রাতে
জড়িয়ে ছিলে এই বাহুতে
সর্বভুলে সখার সাথে
রইবে কোন নির্জনে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে।
সখার বাহু রশির মত করবে আঘাত তোমার মনে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে?


শুনবে যেদিন আমি আছি সেইযে বকুল বনে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে?
আসবে ছুটে হয়ে বাদী
দেখবে মোর জরা সমাধী
অমনি মন উঠবে কাদি,
জমবে অশ্রু চোখের কোণে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে।
হইতো তুমি ভাববে তখন সুখেই আছি এই ভূবনে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে?


(১২ মাঘ ১৪০৬/পিয়ারপুর, কুষ্টিয়া)

মা :: আমার মা

এই ভুবনের সবচেয়ে আপন শুধুই একজনা,
সকলে মোরে ভুলিতে পারে সে ভুলিবে না।
জগতের মাঝে সবচেয়ে দামি একটি শব্দ 'মা',
মহনীয় তুমি বরনীয় তুমি তুমিই আপনা।
এই ভুবনের সবচেয়ে আপন শুধুই একজনা,
সকলে মোরে ভুলিতে পারে সে ভুলিবে না।
জগতের মাঝে সবচেয়ে দামি একটি শব্দ 'মা',
মহনীয় তুমি বরনীয় তুমি তুমিই আপনা।
তোমারই রক্তে তোমারই মাংশে আমারই এ শরীর গড়া,
তোমা হতে এসেছি আমি দেখেছি এ ধরা।
তোমারই দেহে তোমারই খেয়ে বেচেঁ ছিলো দেহ মোর,
জন্মের পরে তোমা হাতে খেয়ে জুড়াই এ অন্তর।
প্রথম অন্ন নিজ হাতে মোরে দিয়েছিলে খাইয়ে,
সকল ক্ষুধা মিটিয়েছিলে তুমি ভালবাসা দিয়ে।
তোমার বুকে মাথা রেখে আমি ঘুমিয়েছিলে কত রাত!
ভেঙ্গেছি তোমার ঘুম সকাল রাত্রি কিংবা প্রভাত।
তীব্র শীতে ভিজিয়েছি কোল তবুও নিয়েছো বুকে,
বুকে নিয়ে ঘুমিয়েছো তুমি শত চুম দিয়ে মুখে।
কাঁপা কাঁপা পায়ে প্রথম হেটেছি তোমারাই হাত ধরে,
কথনও ঘুরিয়েছি দু'চোখ ফুলিয়ে কোলে কাঁধে চড়ে।
তোমারই কথাতে কথা শিখেছি প্রথম ডেকেছি 'মা',
মধ্য রজনীতে জাগিয়ে তোমা ধরেছি কত বাইনা-
চাঁদ, তারা এনে দাও কিংবা গল্প বলো,
বলেছো কাল এনে দেবে সব, এখন ঘুমাতে চলো।
কখনও যদি কেদেঁছি আমি ছুটে এসে নিয়ে বুকে,
কান্না থামাতে চন্দ্র সূর্য পৃথিবী দিয়েছো আমাকে।
কতবার তুমি শিখিয়েছো পড়া ভুলে গেছি সব পরে,
ধৈর্য ধরে শিখিয়েছো তুমি কতনা আদর করে।
সকাল সন্ধা কর ধরে মোরে ঘুরিয়েছো কতবার,
তোমারই কোলে বসে আমি লিখেছি প্রথম অক্ষর।
আমার মাঝে সবকিছু তুমি দিয়েছো উজাড় করে,
অনাদি কাল থাকবে তুমি মোর গভীর অন্তরে।
নিস্কলঙ্ক কত শুভ্র তুমি শেষ্ঠা এ অবনীর,
তোমারই বুকই আমার কাছে ধরার শ্রেষ্ঠ নীড়।
মায়ের বুকে মাথা রেখে দুঃখ জ্বালা সব যায়,
'মা' ছাড়া এ বসুন্ধরায় কেহই আপন নয়।
তাইতো সবাই বেশী করে মায়ের যতন নাও,
অর্থ বিত্তে সুখ নেই তাই মায়ের কাছে যাও।
এ পৃথিবীর মাঝে আমি একটি সত্য জানি,
সবার উপরে সবার উর্ধ্বে সে আমার গর্ভধারিনী।।



(২৯ মাঘ ১৪০৫/পিয়ারপুর, কুষ্টিয়া)

কবিতার উত্স

এ হৃদয়ের সব কথারাশি, কবিতা করে লিখছে মসি,
তোমার কথা ভেবেই একাকী রাতে লিখতে বসি।
যখন কেহ নেইকো সাথে, গভীর এই জোসনা রাতে,
শুধূই নিশাকর আছে জেগে নিঃশ্ব আমায় সঙ্গ দিতে।
সখি আমি তোমা যায়নি ভুলে, যতই তুমি দুঃখ দিলে
ভাঙ্গা হৃদয় হয় পুলকিত ভাবি যখন আমায় ছিলে।
সানায়ের বাজনা বাঁজে, তোমা পৃথ্বী এখন নতুন সাজে,
আজি নতুন সখার তরেই তুমি বধু বেসে আছো সেজে।
এসোনা কভু দেখতে মোরে, কেমন আছি তোমা ছেড়ে,
যদি পার ভুলেই যেও এখনতো এটা চাই তোমা তরে।
আমোরি রচা যত কবিতা, তোমায় ভেবেই হচ্ছে গাঁথা
কভু জন্ম নিতোনা এ কবি, দিতেনা যদি আমায় ব্যাথা।


(১৫ অগ্রহায়ণ ১৪১২/মিরপুর, ঢাকা)

ধ্রুবতারা

মোদের আজো হয়নি দেখা হয়নি জানাশোনা,
শুধুই চলে কথা বলা, কথাই স্বপ্ন বোনা।
আমাই তুমি স্বপ্ন দিলে, দিলে নতুন নাম,
তোমার জীবনে ধ্রুবতারা হয়ে রইলাম।
চাইনা আমি হারিয়ে যেতে- কিংবা হারাতে,
যতই দুরে থাকি মোরা, রয়েছিতো একই সাথে।
আমাই জানি বন্ধু ভাবো তবে কেন এত ভয়?
"পাছে লোকে কিছু বলে" সেটা জানো নিশ্চয়।
যেখানে, যতদুরে, যেভাবেই থাকোনাকো তুমি,
তোমার বন্ধু হয়ে চিরদিনই রবো আমি।
অন্যায়, অনাচার কিছুই করিনি মোরা,
বন্ধু হয়ে রবো যতদিন থাকবে ধ্রুবতারা।।

(২৪ বৈশাখ ১৪১৩/মিরপুর, ঢাকা)