Friday, December 14, 2007

বসে আছি তোমা তরে

ভুলে গেলে আমায় তুমি
করে এ হৃদয় হরন,
তবুও নিঠুর তোমা আশায়
চঞ্চলা এ মন।
চোখের আড়াল রেখে আমাই
করলে মনের আড়াল,
আমায় ছেড়ে তাই দুরে গেলে
পাইনা তোমা নাগাল।
হইতো তুমি মোরে ভুলেই গেছ
কে আমি তোমার!
নতুন দেশে গিয়ে গড়লে তুমি
নতুন সংসার।
দোষ দেবনা তোমাই কভু
হইতো দায়ী আমি,
জানিনা কি ভুল ছিলো মোর
জানেন অন্তর্যামী।
রইবো তবুও তোমা আশায়
সারা জীবন ভরে,
যদি তুমি আসো ফিরে
মম ভুজান্তরে॥


(১৪ বৈশাখ ১৪১২), মিরপুর ঢাকা

Sunday, October 07, 2007

তোমা প্রতীক্ষা

অঝরে ঝরছে বারি, এ যেন গগনের আজাহারী
চাইছে সবাই ভিজতে সেথাই, পাচেছ মজা ভারি,
চাইনা আমি ভিজতে কভূ, অঝরে ঝরছে তবুও
এ যেন কান্না আমারই, জানেন যাহা মম প্রভু।
বৃষ্টিতে কেউ মজা পাই, কেউবা যখন বিদুৎ চমকাই,
হইতো ভিজছে কারো ঘর, এমনই এক ছোট খেলাই,
খেলছে গগন বারি নিয়ে, যেমন তুমি খেল হৃদয় নিয়ে
দেখতে যদি হৃদয় আমার, জানি-উঠতে তুমি চমকায়ে।
কত ক্ষত হৃদয়ে আমার, কেমনে হেথায় বহে ঝড়,
বুঝতে যদি পারতে তুমি, এত ব্যথা দিতে না আর,
না জেনে জানি দিচছ ব্যথা, ভুলেই গেছ আমার কথা,
তবুও ভালবাসবোই আমি, পথ চেয়ে রইবো হেথা ॥


------- (৩০ বৈশাখ ১৪১২), মিরপুর ঢাকা

Friday, September 28, 2007

মনে পড়ে

মনে পড়ে তোমায় তুমি হেথা নাই
আছো মোর হৃদয়ে,
ব্যথা দিয়ে গেলে আশা কেড়ে নিলে
গেলে হারিয়ে।
একদিন ছিলে তুমি পাশে ছিলাম এই আমি
আজি সবই মনে পড়ে;
স্মৃতির পাতা থেকে মুছতে চাই তোমাকে
বারি যেন নাহি ঝরে।
সুখকে বড় ভেবে রেখে মোরে একা ভবে
দুরে চলে গেলে।
তোমা যখন মনে হয় নিঃশ্বাস ভারি হয়
ভিজে উঠে আঁখি জলে।
এতই দুর্বল প্রণয় রাখতে পারিনি তোমায়
আকঁড়ে এ বুকে,
তবুও কানন ভ’রি ফুটিছে নতুন কুড়িঁ
আঁধারে ব্যথা ঢেকে ॥


(২৮ আশ্বিন ১৪০৮/কালিশংকর পুর)

মনের কথা

মনে মনে ভাবি- তুমি মোর সবই
আছো হৃদয় জুড়ে,
বন্ধ করলে আখি- শুধুই তোমা দেখি
খুজে ফিরি ভুজান-রে।

যখনই হয় দেখা- শুধুই চেয়ে থাকা
আর কুশল বিনিময়,
মোবাইলে হয় কথা- কথা দিয়ে মালা গাথা
মনের কথা মনেই রয়।

গোছানো কথাগুলো- হয়ে যায় এলোমেলো
যখন ভাবতে বসি,
বলেছিলে আমায়-, “আমি বন্ধু তোমায়-
এর চেয়ে নয় বেশী।”

জীবনতো একটাই- তাই হারাবার ভয়
তাইতো থাকি দুরে।
কভু আমি যদি ডাকি- তুমি দাও ফাকি
হইতো যাবই মরে।

তাই সবকিছু ভেবে- রয়েছি নিরবে
থাকনা সবটুক হৃদয়ে,
একাকী এ ঘরে- আমি নিঃশব্দে নিথরে
লিখছি তোমা নিয়ে ॥

(২৮ ফাল্গুন ১৪১২/হাউজিং, কুষ্টিয়া)

Saturday, September 22, 2007

সমরাঙ্গন

জীবনটা হলো সমরাঙ্গন, জিততে হলে কর পণ,
পিছু থেকোনা মনে,
ঝেড়ে ফেলো বার্ধক্য, সৃষ্টি কর পার্থক্য
অতীত বর্তমানে।
নবীন তুমি সংগ্রামী তুমি, হইবে তুমি সমরগামী,
অন্দরে তুমি নও,
সমরে এস আপন মনে সংগ্রাম কর দৃঢ় পণে,
জয়ের মালা নাও ॥

(১৩ ফাল্গুন ১৪০৪/পিয়ার পুর)

পুষ্প

ফুটিলো পুষ্প কলি গহীন গহনে,
ছড়ায়ে লুব্ধ ঘ্রাণ গগনে পবনে।
ছুটিছে সহস্র মৌ ঐ পুষ্প তরে,
ফুটিনু যদিও কলি অতি অগোচরে।
কত ঘ্রাণ কত প্রাণ লুকায়ে বক্ষে,
ঝরিছে আপনি তরে সবার অলক্ষ্যে।

তোমা যদি মালা করে পরি মম গলে,
অধরে চুমিয়ে সুধা লয় লোক অন্তরালে,
দেবেকি ব্যথা কভু কাটা হয়ে বিধে?
ফুলে ফুলে নাহি ঘুরি চাইনাকো দোসর,
তবুও কেন ভাঙ্গলে মোর স্বপ্নিল বাসর?
ঝরালে হৃদয় শোণিত কোন অপরাধে?
ফুল চাওয়া অপরাধ? জানা ছিলো না,
উষ্ণ শোণিত কভু বাধা মানে না।
ঝরিবে সকল সৃজন এই কন্টক ভুবনে,
হইতো পাবোনা আমি তোমায় আপনে।
পুষ্প সুধা গরসম আমোরি অধরে,
ছিড়িতে পুষ্প বাধিবে কাটা পুষ্প নীড়ে।

(২৯ ভাদ্র ১৪০৫/কালিশংকর পুর)

অহমিকা

নিশাকর সবিতারে ডাকিয়া কই,
“তোর দিকে কেহ কভু নাহি ফিরে চাই,
অনম্বরে আমি যখন উঠিয়া বসি,
মর্ত্যলোকের সর্ব মুখে পাই শোভা হাসি।
আমারই দেখে প্রণয় জাগে মানব মনে,
শুভ দিন পাই খুজে আমারই কারণে।”
সবিতা তুলিয়া শিরঃ নিশাকররে বলে,
“আমি রাহিত্যে মর্ত্যলোক রহিবে আধার তলে।
আমি যদি না চাহি ধরার পানে,
এ ধরা শুন্য হবে মানব প্রাণে।
আমারই অনুগ্রহে তুই করিস বড়াই,
আমি বিনা তোর জীবনের মূল্য কভূ নাই।”
শুনিয়া নিশাকর বলে,“শোন ভাই-
বড়াই আমার নই, তোমার বড়াই,
আমাদের করেছে সৃজন মানব তরে
মিছা কেন তর্ক এত সময় ধরে।
সে যদি আমারে করিত তোমায়,
কোথায় রহিত তোমা মহামূল্য বড়াই?”
সবিতা হাসিয়া কই,“বুঝেছো এবার,
ধরার বুকে রয়েছে কার বেশী অধিকার,
সৃজন করেছে মোরে তোমার উপরে,
বাড়াইয়ে বলিনা কিছু বলি অধিকারে ॥”


(২২ ফাল্গুন ১৪০৫/কালিশংকর পুর)

আলো

চোখের আলো, দিনের আলো আরও আলো মনের
আলো ছাড়া অন্ধ জীবন, আলোয় সর্ব জোড়ের।
আঁধার ছাড়া আলোয় আঁধার, তাইতো আলো ভালো,
দু’নয়নের আলো ছাড়া, জীবনের সবই যেন কালো।
আঁধার হলো আলোর জীবন, দেহের জীবন মন,
আলো ছাড়া অন্ধকার লাগবে যে এ ভুবন।
মানব দেহের জীবন দু’টা মন ও রুহু,
মন ছাড়া মানব ও পশু মিলবে হুবহু।
মনের আরো সৃষ্টি কোথায়? প্রেমেই যার জীবন,
খোদার প্রেমে, মানব প্রেমে ধন্য ত্রিভুবন।
মনের আলো হারিয়ে গেলে, সবই হবে শূন্য,
আঁধার ছাড়া আলো তেমন হবে না কভু পূর্ণ।
আলো ও আঁধারের খেলায় চলছে এ পৃথ্বী,
মনের আলোয় জয় করে নাও সুখ দুঃখের স্মৃতি॥

(০১ বৈশাখ ১৪০৭/খলিশাদহ)

মধুসূদন দত্ত (সনেট)

তোমারে করিনু স্মরণ এই নিশাতে;
ভাবিনু তোমারই কথা কবিতা করে।
যেমনি ভেবেছো তুমি এ দেশের তরে;
হৃদয়ের উষ্ণ প্রণয় চেয়েছো দিতে।
প্রবাসে থেকে তুমি চেয়েছো কাছে পেতে;
দেশের সংগীত, শোভা গিয়ে বহু দুরে
মসি ঝরেছে তোমা যেমনি অশ্রু ঝরে
কষ্টের আলপনা হয়ে শুভ্র পতাতে।

কেমনে শোধাবো মোরা তোমার এ ঋণ?
তেমার লেখা বঙ্গভাষা ছোট্ট কবিতা,
যে তীব্র স্পন্দ (আজি মোরে) করেছে ক্ষীণ,
ভুলিবোনা তোমারে শোনায় এ বারতা।
আমার ছন্দের মাঝে তোমার সৃজন
ধন্য ধন্য হে শ্রদ্দাধান মধুসূদন ॥


(০৮ ফাল্গুন ১৪০৭/কালিশংকর পুর)

তিতিক্ষু

আমারে তুমি ভালবাসো জেনেই তোমায় ডাকি,
এ জনমে আমি (তোমায়) দিলেম শুধু ফাকি;
মিছামিছি খেলার ছলে
আপনারে ডুবাই জলে
আপনারে ভালবেসে হলেম আজি পাতকী,
আর জেননা আমি কভু তোমায় ভুলে থাকি।

এ জগতের মিথ্যা মোহে তোমারে গেলুম ভুলে,
তবুও তুমি এ অধমরে দাওনি হেলায় ফেলে;
যাদের জন্য এই জীবনে
চাইনি ফিরে তোমার পানে
আজি সেই স্বজনরাই দিলো মোরে দুরে ঠেলে,
তাইতো আমার ভাঙ্গলো ভুল ডাকি তোমা সব ভুলে।

ক্ষমা কর প্রভু মোরে করো না কো অভিমান,
তোমা এ দাস ভুল করেছে, চেয়োনা তার প্রতিদান;
এই অধমরে করো ক্ষমা
ক্ষমাবান জানি তোমা
যদি চাও দিতে পারি জান কোরবান,
ক্ষমা করো দয়াময় - করো মোরে কৃপাদান ॥

(২৭ আশ্বিন ১৪০৮/কালিশংকর পুর)

ব্যবধান

নীতি ও দূর্নীতির মাঝে কতটাই ব্যবধান!
দু'টা এতই কাছাকাছি এসেছে যেন হয়েছে সমান।
আসল-নকল, সাদা-কালো এবং ভাল-মন্দ,
সবই আজ এসেছে কাছে- নেই কোন দন্দ।
কালো যেমন হচ্ছে সাদা, নকল হচ্ছে আসল
ভেজাল পণ্যের সমারহে নকল সেজেছে আসল।
নকল জিনিস কিনছি মোরা অভ্যাস ও সেচ্ছায়,
আসল জিনিস দেখলে এখন সবাই ভূরু কোস্কায়।
কালো যেমন হচ্ছে সাদা অল্প টাকা খরচে
পার্থক্য আর থাকবেনা অদুরে, হইতো এদের মাঝে।
কালো টাকা সাদা হচ্ছে, কালো মানুষ হচ্ছেনা
এমন যদি করা যেত তবে কালো মানুষ থাকতোনা।
কালো মনের মানুষকে যদি করা যেত সাদা
কালো সাদার মাঝে তখন থাকতোনা বাধা।
জানি কোথাও পাওয়া যাবেনা সাদা করার দাওয়াই
বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই শুধু এমন আইন হয়।
দূর্নীতিতে আছি মোরা একাধিকবার শীর্ষে
সাদা-কালো, আসল-নকল আছে তাই মিশে।
মন্দ যেমন হচ্ছেনা কোন ভাবেই ভাল
ব্যবধানটা থেকেই যাবে যতই টাকা ঢালো।
নকল যেমন হয় না আসল, যেমন কালো থেকে সাদা
সবই আসলে আপেক্ষিক, নীতির সাথে বাধা ॥

(৯ আষাঢ় ১৪১২/মিরপুর, ঢাকা)

Sunday, September 16, 2007

অচেনা বন্ধু

জানা নেই শোনা নেই তবুও হয় যদি বন্ধুত্ব
শুধুই কথাতে যদি মেটাতে পারে সব দুরত্ব-
তবে হোক না এমন,
হয়তো তোমার সাথে দেখা হবে নাকো কভু
আমার স্মৃতিপটে চিরদিন তুমি থাকবে তবু
যেমন আছো এখন।
তোমার কন্ঠস্বর, কথার ঢং এবং ছবি দিয়ে
আকঁবো তোমা আমি মনের মাধুরী মিশিয়ে
যেমনটি আমি চাই,
সীমারেখা রইবেনা তোমার আমার বন্ধুত্বের
দুরে থেকেও কাছে রবে আমার হৃদয়ের
দিনে রাতে সব সময়।

এরপর একদিন তুমি যাবে চলে অনেক দুরে
হয়তো কথা হবেনা সম্ভব গিয়ে নতুন ঘরে
এমনকি ভুলেই যাবে,
নতুন সংসার পাবে- আর পাবে নতুন ভুবন
সেথায় তোমার নতুন সখা নতুন আয়োজন
দোয়া করি সুখি রবে।
কঠিন বাস্তবতায় হবেনা আমাদের যোগাযোগ
স্মৃতি থেকে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাবে সমস্ত আবেগ
আমিও ভুলবো তোমাকে,
হয়তো দেখা হবে মোদের কোন পড়ন্ত বেলায়
চিনবোনা কেউ কাউকে, হবে নতুন পরিচয়
জড়াবো নতুন সম্পর্কে।

ঢাকা ১১ সেপ্টেম্বর ২০০৭

Sunday, May 27, 2007

তিন কন্যা

বাড়ির পাশে রইচ চাচা তিনটি যাহার কন্যা,
সেই দুঃখেই তিনি না কি পুত্র আর চান না।
কন্যার হ্যাট্টিক হওয়ায় তিনি আর পীর মাজারে যাননি,
খন তার কন্যারা শুনি দু'নয়নের তিন মনি।
একই গায়ের সুলতান চাচা তারও কন্যা তিনটি,
তৃতীয় কন্যার জন্ম শুনে খারাপ হলো মনটি-
মনের দুঃখে চাচা আমার ছাড়লো মসজিদে আসা,
কথা শুনে ইয়ার্কি সম্পর্কে বাড়লো তামাসা।
সবাই বলে হৃদয়ে তার পুত্রের যায়গা শুন্য,
কন্যা দিয়েই তিনি সেথাই করবেন জানি পূর্ণ।
তিন কন্যার আরেক জনক যিনি নিকট আত্মীয় আমার,
এখনও তার পুত্রর সাধ ছাড়েনি শুনি দুয়ার।
ছোট কন্যার জন্ম শুনে যাননি তাকে দেখতে,
এখন তিনি ছোটটি ছাড়া পারেননা কোথাও থাকতে।
ছোট কন্যার নামটি তরু অগ্নি ঝরে বাকে,
মেজ কন্যারা বুদ্ধি বেশী বড়টি পড়ে ফাঁকে।
বেকার একটি চাচা আমার ইমরা তার নামটি,
সংসারে সবার বড় তিনি কন্যা তার তিনটি।
বড়টির বিয়ে শেষ ছোটটি কাস থ্রির,
সমাজ সেবা করেন তিনি সময় যেহেতু ফ্রী।
নজরুল চাচার দুঃখ বড় নেই সন্তান তার,
সন্তানের আশায় আশায় করছেন জীবন পার।
এদের কথা শুনে নজরুল চাচা বলে,
"তিনটির যায়গায় একটি হলেও দুঃখ যেত চলে"।।


(১৬ পৌষ ১৪০৭/কালিশংকর পুর, কুষ্টিয়া)

প্রিয়া

প্রিয়াঃ আমি যখন থাকবো না মর্ত্যলোকের রিক্তপুরে;
হইতো আমি হারিয়ে যাব গভীর কোন অন্ধকারে;
আমোরি দেওয়া স্মতির মেলা রইবে কি তোমার হৃদয় জুড়ে?
যেদিন তোমা দেখিনু প্রথম;
প্রথম মোদের সেই যে কথন,
দেবে কি তোমা ক্ষণ রোদনভ্রমেও কভু আমোর তরে?
ফুটবে যখন রক্ত গোলাপ আমোরি এই বুকটি চিরে,
প'ড়বে কি তোমা দৃষ্টি সীমা নির্জনে মোর সমাধি পরে?
গভীর রাতে হইতো কভু দেখবে তুমি আমার স্বপন;
হইতো তোমা থাকবে পার্শ্বে আমোরই মতো অন্য স্বজন;
আমোর স্মৃতি আমোরই ছোয়া দেবে কি তোমা গহিন বেদন?
মাথা রেখে এ বুকেতেবলেছিলে থাকবে সাথে;
কথা কি স্বপন রাতে, ঝরায় অশ্রু আমোরই মতোন?
যেদিন আমি পালিয়ে গেলুম ছিন্ন করে সকল বাধন,
যেদিন সে বর্ষ আসবে ঘুরে প'ড়বে কি মনে আমার কথন?
খোলা গগনে বসবে যখন চাঁদনী আলো প'ড়বে মুখে;
চাঁদের মাঝে খুঁজবে আমায় একা আছি কেমন সুখে;
এমনই এক চাঁদনী রাতে ঝরবে অশ্রু কোন সে দুখে?
রজনীর সেই যে ক্ষণে,চেয়েছিলে আমারই পানে;
কভু কি তোমা আমোর তানে, ঝরেছে অশ্রু মর্ত্যলোকে?
শেষ দেখাতে, শেষ বেলাতে, আমোরই দু'নয়ন দেখে;
কি পেয়েছো, কি রেখেছো যে, অশ্রু ঝরে এখনও সুখে?
(১২ মাঘ ১৪০৬/পিয়ারপুর, কুষ্টিয়া)

অভিমানী

তোমায় আজি প'ড়ছে মনে কোথায় তুমি মা;
তোমার দেওয়া সেই ভালবাসা আজ আমার সাধনা।
রোজ সকালে নামাজের সময় ডাকতে আমায় এসে
"খোকা উঠো পড়তে বসো।"ডাকতে ভালবেসে।
ঘুম থেকে মা উঠতো না আমার এ পোড়া দেহ;
তোমার কভু হতো ভারি কাঁপতে যেন ঐ গেহ।
হইতো কভু ঘুমিয়ে আছি শীত কিংবা আষাঢ়ে,
কাঁথাটা তুমি কেড়ে নিয়ে তুলতে কান ধরে।
পরে ভালবেসে ডাকতে কাছে বসতে আমার পাশে
তারপরেতে সূর্য বাবু উঠতো হেসে হেসে।
অবশেষে পাঠশালাতে যখন আমি যায়,
ভাবতুম আমি, মায়ের শাসন হেথা আর নাই।
রোদ দুপুরে আসার সময় রোদে মুখটি হতো লাল,
আদর দিয়ে কোলে নিয়ে ভরতে চুমুই গাল।
আবার তুমি ঘুম পারাতে আদর করে করে,
ঘুম পারাতে আদর সোহাগ চড়ও দিতে মোরে।
ঘুম শেষে ছুটি আমার, খেলতে যেতাম মাঠে,
ভাবতুম, এমন খেলে আমার যদি দিনটি যেত কেটে।
সন্ধা হবার আগেই যেন আমার বাড়ি ফেরা চাই,
একটু দেরি হলে তোমার কি এমন ক্ষতি হয়।
আবার তুমি পড়তে বসাও, ধরতে পড়া যখন,
ভয়ে আমার কাঁপতো বুক, কাঁদতো আমার মন।
ভেবেছি তখন বাধন চিরে কেমন করে পালাই,
দুরে ঠেলে কেন এ মন তোমারে শুধু চাই।
চুপটি করে আর থেকোনা সাড়া দাও অভিমানী;
তোমার খোকা কাঁদছে আজি দাও আঁচলখানি।।

(০৮ শ্রাবণ, ১৪০৭/কালিশংকর পুর, কুষ্টিয়া)

ধরার শ্রেষ্ঠ হাসি

সূর্য বাবু তখন গিয়েছে ঢলে রয়েছে রক্তিম বেশে,
ক্লান্ত শরীরে ফিরছি বাড়ি সেদিনের কাজ শেষে।
আসতে পথে নীলদীঘিতে উঠলো মৃদু ঝড়,
ভাবছি তখন, অবশেষে কখন পাব ঘর।
দেখি, জীর্ণ বেশ এলো কেশ আট-নয় এর এক মেয়ে,
খড় কুটা কুড়ে এটেছে, লয়ে যাবে বাড়ী বেয়ে।
মাথায় তুলিতে পড়ে গেল বোঝা আবার তুলিতে যায়,
এভাবে তার দেরি হয়ে গেল এদিকে ওদিকে চাই।
শ দিয়ে যায় কোট পরা সা'ব দেখতে অতি বেশ,বলল খুকি,
"বাবু, বোঝা তুলে মম মাথায় কমাও একটু ক্লেশ।
""মাগো"- লাথি দিল সা'ব খুকি লুটালো ধরার বুকে,
বাবু সা'ব ফিরে চলে গেলে দুরে, চেয়েও দেখেনি তাকে।
দুর থেকে দেখি ব্যাথা ভরা চোখে আমিও অসহায়,
উঠলো কেঁদে - কাঁদেনি কখনও যে মোর পাষাণ হৃদয়।
আমায় দেখে কেঁদে ফেলে খুকি, চাইছে অবাক চোখে,
ভাবে, আমিও হইতো বাবুর মতো লাথি দেব তার বুকে।
ভয়ে ভয়ে চাই বলেনাকো কথা, ফিরালো মুখ খুকি,
থামলো কান্না তার মাথায় হাতটি যখন রাখি।
ছোট্ট একটি বোঝা আমি তুলে দিনু তার মাথায়,
হেসে চলে গেল খুকি, দুরে গিয়ে আবারও ফিরে চাই।
আমার হৃদয় উঠলো কেঁদে যখন পালালো সর্বনাশী,
মনে পড়ে নাকো আমি কোথায় দেখেছি এমন হাসি।
মায়ের হাসি ভুলে গেছি আমি হইতো এটা তাই-ই,
আমার দেখা এ ধরাতে শ্রেষ্ঠ হাসি এটাই।।


(১২ শ্রাবণ ১৪০৮/কালিশংকর পুর, কুষ্টিয়া)

Thursday, February 08, 2007

এক মাসের ডিটেনশন

একমাস একসাথে থাকবে ওরা দিবা রাতে
গল্প হবে খেলা হবে শুয়ে রবে একইসাথে,
মজাই হবে, ফ্রি খাওয়া পাবে এই হাজতে।
ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছিলো গোচর
সাথে ছিলো এতোদিনে অনেক দোসর,
আজিকে তাদের কেউ নেইকো সাথে।

দূর্নীতি স্বজনপ্রীতি করে তারা কারাগারে
শত্রু থাকলেও এখন এসেছে এক কাতারে,
এ যেন সাপ ও নেকুল রয়েছে একই ঘরে।
ভাল কাজে এরা সবসমসয় করে হানাহানি
মন্দ কাজে তেমনই বন্ধু হয় জানি,
ক্ষমতার লোভে এরা মানুষকেও বলি দিতে পারে।

মানুষকে টুকরো করে অথবা দিনদুপুরে পিটিয়ে
এসময় বাচাঁর জন্য অনেকে পরেছে পায়ে লুটিয়ে,
ওরা তখন আরো মেরেছে মনের ঝাল মিটিয়ে।
এরাই আবার ভোটের জন্য ঘোরে দ্বারে দ্বারে
এদের তরে আজিকে যেন ঘৃণা মোদের ঝরে,
এদেরকে ধরতে হবে যেন না পালায় লেজ গুটিয়ে।

নষ্ট রাজনীতি

হিংসার রাজনীতি, ও আছে দূর্নীতি
মিশে গেছে শিরায় উপশিরায়,
নেতাদের হয়ে বলি, তবুও মোরা পথো চলি
এখনতো সবই সহ্য হয়।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, আমাদের নিত্য সাথী
এর সবই হয়েছে জানা,
যেই যায় মতায়, লুটেপুটে সবই খায়
আর বিরোধীদের হরতাল যন্ত্রনা,
কবে পাব পরিত্রাণ? শুনবো জীবনের গান-
আমাদের রাজনৈতিকদের মুখে,
কথা হবে কম- কাজ বেশী, ফুটাবে মুখে হাসি
দেশের সবাই রইবে সুখে।
এমন স্বপ্ন আমি, দেখি কত দিবাযামী
এভাবে হারাচ্ছি ধর্য্য ও শক্তি,
নতুন প্রজন্ম তরে, বসে আছি পথো ধরে
জানিনা কভু পাব কিনা মুক্তি !!

Thursday, January 11, 2007

তোমারই কবিতা

আকাশের পানে চেয়ে দেখ মুখটি তুলে
চাঁদখানি কেমন করে পড়েছে হেলে।
জোসনার আলোই তোমা উঠোন জুড়ে
তোমার সাথে বসে আছি নিশিকাল ধরে।
সারাক্ষণ আমি থাকি তোমার আসে পাশে
দিবা নিশি সকাল সন্ধা তোমারই নিঃশ্বাসে।
মনটা খারাপ করে তখন থাক তুমি একা
নিশিথিনীর সাথে যখন হয়নাকো দেখা।
চোখের পানি মুছে ফেলে ভেবো একটু ক্ষণ
তোমার মাথায় হাতটা বুলাই যখন তখন।


(২৮ ফাল্গুন ১৪১২/হাউজিং, কুষ্টিয়া)

তোমার আমি

আমিতো আমার নয় হয়েছি তোমার,
তুমি ছাড়া কেমনে বাঁচি বলো আর।
কাটেনা সময় আর তোমার বিহনে,
তুমি জড়িয়ে আছো আমার জীবন মরনে।
তুমি যদি থাক পাশে সারাটা ক্ষণ,
জড়াবো এ বুকে তোমায় করে আপন।
তোমায় ভেবেই সারাটা দিন যায় বেয়ে,
রাত কাটে তোমার ছবি এ বুকে লয়ে।
ঘুমায়েও তোমাকে দেখি আমার স্বপনে,
তুমি মিশে আছো মোর কবিতা রচনে।
তোমাকে ছাড়া একটি ক্ষণও পারিনা ভাবতে,
মিশে আছো তুমি আমার সারা ধমণীতে।
যেও নাকে আমায় ছেড়ে কভু একা করে
মরে যাবে, মরে যাবে (আমি) তোমায় ছেড়ে।



(২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৩/মিরপুর, ঢাকা )

স্মৃতি থেকে

যেদিন তুমি আমায় ভুলে হাত বাড়াবে অন্য পানে,
প'ড়বে কি তখন আমায় মনে?
ও হাতের ঐ উষ্ণ ছোয়ায়
শিউরে উঠবে কঠিন হৃদয়
উঠবে জেগে হারানো প্রণয়,
চমকে উঠবে চুম্বনে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে।
ভাববে বুঝি আমোরই অধর ছুয়ে আছে অধর কোণে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে।

বরণের ঐ লোকের ভিড়ে থাকবে সবার চোখের কোণে,
প'ড়বে কি তখন আমায় মনে?
নবাগতের ফুলের তোড়া
বেদনা হয়ে করবে তাড়া
লাগবে একা আমায় ছাড়া,
আপন জনের আয়োজনে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে।
আপন জনের রুদ্র কখন ভরাবে দু'চোখ অশ্রুবানে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে?

গভীর রাতে নিদ্রা টুটে দেখবে সখার বুকের কোণে,
প'ড়বে কি তখন আমায় মনে?
সখার বুকের উষ্ণতা তখন
আপন দেহ করবে দহন
ভাববে ক্ষণে আমিই আপন,
ভাঙ্গবে ভাবনা বন্ধনে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে।
স্মৃতির পাতার মোর ছবিটা ভাসবে তখন চোখের কোণে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে?

যখন সখার বুকে মিশে রইবে বাহু বন্ধনে,
প'ড়বে কি তখন আমায় মনে?
সকাল সন্ধা কিংবা রাতে
জড়িয়ে ছিলে এই বাহুতে
সর্বভুলে সখার সাথে
রইবে কোন নির্জনে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে।
সখার বাহু রশির মত করবে আঘাত তোমার মনে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে?


শুনবে যেদিন আমি আছি সেইযে বকুল বনে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে?
আসবে ছুটে হয়ে বাদী
দেখবে মোর জরা সমাধী
অমনি মন উঠবে কাদি,
জমবে অশ্রু চোখের কোণে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে।
হইতো তুমি ভাববে তখন সুখেই আছি এই ভূবনে,
প'ড়বে তখন আমায় মনে?


(১২ মাঘ ১৪০৬/পিয়ারপুর, কুষ্টিয়া)

মা :: আমার মা

এই ভুবনের সবচেয়ে আপন শুধুই একজনা,
সকলে মোরে ভুলিতে পারে সে ভুলিবে না।
জগতের মাঝে সবচেয়ে দামি একটি শব্দ 'মা',
মহনীয় তুমি বরনীয় তুমি তুমিই আপনা।
এই ভুবনের সবচেয়ে আপন শুধুই একজনা,
সকলে মোরে ভুলিতে পারে সে ভুলিবে না।
জগতের মাঝে সবচেয়ে দামি একটি শব্দ 'মা',
মহনীয় তুমি বরনীয় তুমি তুমিই আপনা।
তোমারই রক্তে তোমারই মাংশে আমারই এ শরীর গড়া,
তোমা হতে এসেছি আমি দেখেছি এ ধরা।
তোমারই দেহে তোমারই খেয়ে বেচেঁ ছিলো দেহ মোর,
জন্মের পরে তোমা হাতে খেয়ে জুড়াই এ অন্তর।
প্রথম অন্ন নিজ হাতে মোরে দিয়েছিলে খাইয়ে,
সকল ক্ষুধা মিটিয়েছিলে তুমি ভালবাসা দিয়ে।
তোমার বুকে মাথা রেখে আমি ঘুমিয়েছিলে কত রাত!
ভেঙ্গেছি তোমার ঘুম সকাল রাত্রি কিংবা প্রভাত।
তীব্র শীতে ভিজিয়েছি কোল তবুও নিয়েছো বুকে,
বুকে নিয়ে ঘুমিয়েছো তুমি শত চুম দিয়ে মুখে।
কাঁপা কাঁপা পায়ে প্রথম হেটেছি তোমারাই হাত ধরে,
কথনও ঘুরিয়েছি দু'চোখ ফুলিয়ে কোলে কাঁধে চড়ে।
তোমারই কথাতে কথা শিখেছি প্রথম ডেকেছি 'মা',
মধ্য রজনীতে জাগিয়ে তোমা ধরেছি কত বাইনা-
চাঁদ, তারা এনে দাও কিংবা গল্প বলো,
বলেছো কাল এনে দেবে সব, এখন ঘুমাতে চলো।
কখনও যদি কেদেঁছি আমি ছুটে এসে নিয়ে বুকে,
কান্না থামাতে চন্দ্র সূর্য পৃথিবী দিয়েছো আমাকে।
কতবার তুমি শিখিয়েছো পড়া ভুলে গেছি সব পরে,
ধৈর্য ধরে শিখিয়েছো তুমি কতনা আদর করে।
সকাল সন্ধা কর ধরে মোরে ঘুরিয়েছো কতবার,
তোমারই কোলে বসে আমি লিখেছি প্রথম অক্ষর।
আমার মাঝে সবকিছু তুমি দিয়েছো উজাড় করে,
অনাদি কাল থাকবে তুমি মোর গভীর অন্তরে।
নিস্কলঙ্ক কত শুভ্র তুমি শেষ্ঠা এ অবনীর,
তোমারই বুকই আমার কাছে ধরার শ্রেষ্ঠ নীড়।
মায়ের বুকে মাথা রেখে দুঃখ জ্বালা সব যায়,
'মা' ছাড়া এ বসুন্ধরায় কেহই আপন নয়।
তাইতো সবাই বেশী করে মায়ের যতন নাও,
অর্থ বিত্তে সুখ নেই তাই মায়ের কাছে যাও।
এ পৃথিবীর মাঝে আমি একটি সত্য জানি,
সবার উপরে সবার উর্ধ্বে সে আমার গর্ভধারিনী।।



(২৯ মাঘ ১৪০৫/পিয়ারপুর, কুষ্টিয়া)

কবিতার উত্স

এ হৃদয়ের সব কথারাশি, কবিতা করে লিখছে মসি,
তোমার কথা ভেবেই একাকী রাতে লিখতে বসি।
যখন কেহ নেইকো সাথে, গভীর এই জোসনা রাতে,
শুধূই নিশাকর আছে জেগে নিঃশ্ব আমায় সঙ্গ দিতে।
সখি আমি তোমা যায়নি ভুলে, যতই তুমি দুঃখ দিলে
ভাঙ্গা হৃদয় হয় পুলকিত ভাবি যখন আমায় ছিলে।
সানায়ের বাজনা বাঁজে, তোমা পৃথ্বী এখন নতুন সাজে,
আজি নতুন সখার তরেই তুমি বধু বেসে আছো সেজে।
এসোনা কভু দেখতে মোরে, কেমন আছি তোমা ছেড়ে,
যদি পার ভুলেই যেও এখনতো এটা চাই তোমা তরে।
আমোরি রচা যত কবিতা, তোমায় ভেবেই হচ্ছে গাঁথা
কভু জন্ম নিতোনা এ কবি, দিতেনা যদি আমায় ব্যাথা।


(১৫ অগ্রহায়ণ ১৪১২/মিরপুর, ঢাকা)

ধ্রুবতারা

মোদের আজো হয়নি দেখা হয়নি জানাশোনা,
শুধুই চলে কথা বলা, কথাই স্বপ্ন বোনা।
আমাই তুমি স্বপ্ন দিলে, দিলে নতুন নাম,
তোমার জীবনে ধ্রুবতারা হয়ে রইলাম।
চাইনা আমি হারিয়ে যেতে- কিংবা হারাতে,
যতই দুরে থাকি মোরা, রয়েছিতো একই সাথে।
আমাই জানি বন্ধু ভাবো তবে কেন এত ভয়?
"পাছে লোকে কিছু বলে" সেটা জানো নিশ্চয়।
যেখানে, যতদুরে, যেভাবেই থাকোনাকো তুমি,
তোমার বন্ধু হয়ে চিরদিনই রবো আমি।
অন্যায়, অনাচার কিছুই করিনি মোরা,
বন্ধু হয়ে রবো যতদিন থাকবে ধ্রুবতারা।।

(২৪ বৈশাখ ১৪১৩/মিরপুর, ঢাকা)