Friday, December 14, 2007

বসে আছি তোমা তরে

ভুলে গেলে আমায় তুমি
করে এ হৃদয় হরন,
তবুও নিঠুর তোমা আশায়
চঞ্চলা এ মন।
চোখের আড়াল রেখে আমাই
করলে মনের আড়াল,
আমায় ছেড়ে তাই দুরে গেলে
পাইনা তোমা নাগাল।
হইতো তুমি মোরে ভুলেই গেছ
কে আমি তোমার!
নতুন দেশে গিয়ে গড়লে তুমি
নতুন সংসার।
দোষ দেবনা তোমাই কভু
হইতো দায়ী আমি,
জানিনা কি ভুল ছিলো মোর
জানেন অন্তর্যামী।
রইবো তবুও তোমা আশায়
সারা জীবন ভরে,
যদি তুমি আসো ফিরে
মম ভুজান্তরে॥


(১৪ বৈশাখ ১৪১২), মিরপুর ঢাকা

Sunday, October 07, 2007

তোমা প্রতীক্ষা

অঝরে ঝরছে বারি, এ যেন গগনের আজাহারী
চাইছে সবাই ভিজতে সেথাই, পাচেছ মজা ভারি,
চাইনা আমি ভিজতে কভূ, অঝরে ঝরছে তবুও
এ যেন কান্না আমারই, জানেন যাহা মম প্রভু।
বৃষ্টিতে কেউ মজা পাই, কেউবা যখন বিদুৎ চমকাই,
হইতো ভিজছে কারো ঘর, এমনই এক ছোট খেলাই,
খেলছে গগন বারি নিয়ে, যেমন তুমি খেল হৃদয় নিয়ে
দেখতে যদি হৃদয় আমার, জানি-উঠতে তুমি চমকায়ে।
কত ক্ষত হৃদয়ে আমার, কেমনে হেথায় বহে ঝড়,
বুঝতে যদি পারতে তুমি, এত ব্যথা দিতে না আর,
না জেনে জানি দিচছ ব্যথা, ভুলেই গেছ আমার কথা,
তবুও ভালবাসবোই আমি, পথ চেয়ে রইবো হেথা ॥


------- (৩০ বৈশাখ ১৪১২), মিরপুর ঢাকা

Friday, September 28, 2007

মনে পড়ে

মনে পড়ে তোমায় তুমি হেথা নাই
আছো মোর হৃদয়ে,
ব্যথা দিয়ে গেলে আশা কেড়ে নিলে
গেলে হারিয়ে।
একদিন ছিলে তুমি পাশে ছিলাম এই আমি
আজি সবই মনে পড়ে;
স্মৃতির পাতা থেকে মুছতে চাই তোমাকে
বারি যেন নাহি ঝরে।
সুখকে বড় ভেবে রেখে মোরে একা ভবে
দুরে চলে গেলে।
তোমা যখন মনে হয় নিঃশ্বাস ভারি হয়
ভিজে উঠে আঁখি জলে।
এতই দুর্বল প্রণয় রাখতে পারিনি তোমায়
আকঁড়ে এ বুকে,
তবুও কানন ভ’রি ফুটিছে নতুন কুড়িঁ
আঁধারে ব্যথা ঢেকে ॥


(২৮ আশ্বিন ১৪০৮/কালিশংকর পুর)

মনের কথা

মনে মনে ভাবি- তুমি মোর সবই
আছো হৃদয় জুড়ে,
বন্ধ করলে আখি- শুধুই তোমা দেখি
খুজে ফিরি ভুজান-রে।

যখনই হয় দেখা- শুধুই চেয়ে থাকা
আর কুশল বিনিময়,
মোবাইলে হয় কথা- কথা দিয়ে মালা গাথা
মনের কথা মনেই রয়।

গোছানো কথাগুলো- হয়ে যায় এলোমেলো
যখন ভাবতে বসি,
বলেছিলে আমায়-, “আমি বন্ধু তোমায়-
এর চেয়ে নয় বেশী।”

জীবনতো একটাই- তাই হারাবার ভয়
তাইতো থাকি দুরে।
কভু আমি যদি ডাকি- তুমি দাও ফাকি
হইতো যাবই মরে।

তাই সবকিছু ভেবে- রয়েছি নিরবে
থাকনা সবটুক হৃদয়ে,
একাকী এ ঘরে- আমি নিঃশব্দে নিথরে
লিখছি তোমা নিয়ে ॥

(২৮ ফাল্গুন ১৪১২/হাউজিং, কুষ্টিয়া)

Saturday, September 22, 2007

সমরাঙ্গন

জীবনটা হলো সমরাঙ্গন, জিততে হলে কর পণ,
পিছু থেকোনা মনে,
ঝেড়ে ফেলো বার্ধক্য, সৃষ্টি কর পার্থক্য
অতীত বর্তমানে।
নবীন তুমি সংগ্রামী তুমি, হইবে তুমি সমরগামী,
অন্দরে তুমি নও,
সমরে এস আপন মনে সংগ্রাম কর দৃঢ় পণে,
জয়ের মালা নাও ॥

(১৩ ফাল্গুন ১৪০৪/পিয়ার পুর)

পুষ্প

ফুটিলো পুষ্প কলি গহীন গহনে,
ছড়ায়ে লুব্ধ ঘ্রাণ গগনে পবনে।
ছুটিছে সহস্র মৌ ঐ পুষ্প তরে,
ফুটিনু যদিও কলি অতি অগোচরে।
কত ঘ্রাণ কত প্রাণ লুকায়ে বক্ষে,
ঝরিছে আপনি তরে সবার অলক্ষ্যে।

তোমা যদি মালা করে পরি মম গলে,
অধরে চুমিয়ে সুধা লয় লোক অন্তরালে,
দেবেকি ব্যথা কভু কাটা হয়ে বিধে?
ফুলে ফুলে নাহি ঘুরি চাইনাকো দোসর,
তবুও কেন ভাঙ্গলে মোর স্বপ্নিল বাসর?
ঝরালে হৃদয় শোণিত কোন অপরাধে?
ফুল চাওয়া অপরাধ? জানা ছিলো না,
উষ্ণ শোণিত কভু বাধা মানে না।
ঝরিবে সকল সৃজন এই কন্টক ভুবনে,
হইতো পাবোনা আমি তোমায় আপনে।
পুষ্প সুধা গরসম আমোরি অধরে,
ছিড়িতে পুষ্প বাধিবে কাটা পুষ্প নীড়ে।

(২৯ ভাদ্র ১৪০৫/কালিশংকর পুর)

অহমিকা

নিশাকর সবিতারে ডাকিয়া কই,
“তোর দিকে কেহ কভু নাহি ফিরে চাই,
অনম্বরে আমি যখন উঠিয়া বসি,
মর্ত্যলোকের সর্ব মুখে পাই শোভা হাসি।
আমারই দেখে প্রণয় জাগে মানব মনে,
শুভ দিন পাই খুজে আমারই কারণে।”
সবিতা তুলিয়া শিরঃ নিশাকররে বলে,
“আমি রাহিত্যে মর্ত্যলোক রহিবে আধার তলে।
আমি যদি না চাহি ধরার পানে,
এ ধরা শুন্য হবে মানব প্রাণে।
আমারই অনুগ্রহে তুই করিস বড়াই,
আমি বিনা তোর জীবনের মূল্য কভূ নাই।”
শুনিয়া নিশাকর বলে,“শোন ভাই-
বড়াই আমার নই, তোমার বড়াই,
আমাদের করেছে সৃজন মানব তরে
মিছা কেন তর্ক এত সময় ধরে।
সে যদি আমারে করিত তোমায়,
কোথায় রহিত তোমা মহামূল্য বড়াই?”
সবিতা হাসিয়া কই,“বুঝেছো এবার,
ধরার বুকে রয়েছে কার বেশী অধিকার,
সৃজন করেছে মোরে তোমার উপরে,
বাড়াইয়ে বলিনা কিছু বলি অধিকারে ॥”


(২২ ফাল্গুন ১৪০৫/কালিশংকর পুর)

আলো

চোখের আলো, দিনের আলো আরও আলো মনের
আলো ছাড়া অন্ধ জীবন, আলোয় সর্ব জোড়ের।
আঁধার ছাড়া আলোয় আঁধার, তাইতো আলো ভালো,
দু’নয়নের আলো ছাড়া, জীবনের সবই যেন কালো।
আঁধার হলো আলোর জীবন, দেহের জীবন মন,
আলো ছাড়া অন্ধকার লাগবে যে এ ভুবন।
মানব দেহের জীবন দু’টা মন ও রুহু,
মন ছাড়া মানব ও পশু মিলবে হুবহু।
মনের আরো সৃষ্টি কোথায়? প্রেমেই যার জীবন,
খোদার প্রেমে, মানব প্রেমে ধন্য ত্রিভুবন।
মনের আলো হারিয়ে গেলে, সবই হবে শূন্য,
আঁধার ছাড়া আলো তেমন হবে না কভু পূর্ণ।
আলো ও আঁধারের খেলায় চলছে এ পৃথ্বী,
মনের আলোয় জয় করে নাও সুখ দুঃখের স্মৃতি॥

(০১ বৈশাখ ১৪০৭/খলিশাদহ)

মধুসূদন দত্ত (সনেট)

তোমারে করিনু স্মরণ এই নিশাতে;
ভাবিনু তোমারই কথা কবিতা করে।
যেমনি ভেবেছো তুমি এ দেশের তরে;
হৃদয়ের উষ্ণ প্রণয় চেয়েছো দিতে।
প্রবাসে থেকে তুমি চেয়েছো কাছে পেতে;
দেশের সংগীত, শোভা গিয়ে বহু দুরে
মসি ঝরেছে তোমা যেমনি অশ্রু ঝরে
কষ্টের আলপনা হয়ে শুভ্র পতাতে।

কেমনে শোধাবো মোরা তোমার এ ঋণ?
তেমার লেখা বঙ্গভাষা ছোট্ট কবিতা,
যে তীব্র স্পন্দ (আজি মোরে) করেছে ক্ষীণ,
ভুলিবোনা তোমারে শোনায় এ বারতা।
আমার ছন্দের মাঝে তোমার সৃজন
ধন্য ধন্য হে শ্রদ্দাধান মধুসূদন ॥


(০৮ ফাল্গুন ১৪০৭/কালিশংকর পুর)

তিতিক্ষু

আমারে তুমি ভালবাসো জেনেই তোমায় ডাকি,
এ জনমে আমি (তোমায়) দিলেম শুধু ফাকি;
মিছামিছি খেলার ছলে
আপনারে ডুবাই জলে
আপনারে ভালবেসে হলেম আজি পাতকী,
আর জেননা আমি কভু তোমায় ভুলে থাকি।

এ জগতের মিথ্যা মোহে তোমারে গেলুম ভুলে,
তবুও তুমি এ অধমরে দাওনি হেলায় ফেলে;
যাদের জন্য এই জীবনে
চাইনি ফিরে তোমার পানে
আজি সেই স্বজনরাই দিলো মোরে দুরে ঠেলে,
তাইতো আমার ভাঙ্গলো ভুল ডাকি তোমা সব ভুলে।

ক্ষমা কর প্রভু মোরে করো না কো অভিমান,
তোমা এ দাস ভুল করেছে, চেয়োনা তার প্রতিদান;
এই অধমরে করো ক্ষমা
ক্ষমাবান জানি তোমা
যদি চাও দিতে পারি জান কোরবান,
ক্ষমা করো দয়াময় - করো মোরে কৃপাদান ॥

(২৭ আশ্বিন ১৪০৮/কালিশংকর পুর)